
বাঘবন্দি মিসির আলি
"বাঘবন্দি মিসির আলি"বইটির প্রথমের কিছু কথা:
যখন যা প্রয়ােজন তা হাতের কাছে পাওয়া গেলে কেমন হত— এ রকম চিন্তা ইদানীং মিসির আলি করা শুরু করেছেন। এবং তিনি খানিকটা দুঃশ্চিন্তায়ও পড়েছেন। মানুষ যখন শারীরিক এবং মানসিক ভাবে দুর্বল হয় তখনি এ ধরনের চিন্তা করে। তখনি শুধু মনে হয় সব কেন হাতের কাছে নেই। তিনি মানসিক এই অবস্থার নাম দিয়েছেন বেহেশত কমপ্লেক্স। এ ধরনের ব্যবস্থা ধর্মগ্রন্থের বেহেশতের বর্ণনায় আছে। যা ইচ্ছা করা হবে তাই হাতের মুঠোয় চলে আসবে। আঙুর খেতে ইচ্ছা করছে, আঙুরের থােকা ঝুলতে থাকবে নাকের কাছে। | মিসির আলি খাটে শুয়ে আছেন। পায়ের কাছের জানালাটা খােলা। ঠাণ্ডা বাতাস আসছে। গা শিরশির করছে। এবং তিনি ভাবছেন— কেউ যদি জানালাটা বন্ধ করে দিত। ঘরে কাজের একটা ছেলে আছে ইয়াসিন নাম। তাকে ডাকলেই সে এসে জানালা বন্ধ করে দেবে। ডাকতে ইচ্ছা করছে না। তার পায়ের কাছে ভঁজ করা একটা চাদর আছে। ভেড়ার ললামের পশমিনা চাদর। নেপাল থেকে কে যেন তাঁর জন্যে নিয়ে এসেছিল। ইচ্ছা করলেই তিনি চাদরটা গায়ে দিতে পারেন। সেই ইচ্ছাও করছে না। বরং ভাবছেন চাদরটা যদি আপনা আপনি গায়ের ওপর পড়তাে তাহলে মন্দ হত না । নেপাল থেকে চাদরটা কে এনেছিল? নাম বা পরিচয় কিছুই মনে আসছে না। উপহারটা তিনি ব্যবহার করছেন, কিন্তু উপহার দাতার কথা তার মনে নেই। এই ব্যর্থতা মানসিক ব্যর্থতা। রাত কত হয়েছে মিসির আলি জানেন না। এই ঘরে কোনাে ঘড়ি নেই। বসার ঘরে আছে। সময় জানতে হলে বসার ঘরে যেতে হবে, ঘড়ি দেখতে হবে। ইয়াসিনকে সময় দেখতে বললে লাভ হবে না। সে ঘড়ি দেখতে জানে । অনেক চেষ্টা করেও এই সামান্য ব্যাপারটা ইয়াসিনকে তিনি শেখাতে পারেন নি। কাজেই ধরে নেয়া যেতে পারে শিক্ষক হিসেবে তিনি ব্যর্থ। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এই ব্যর্থতাটাও তিনি নিতে পারছেন না। এটাও মানসিক দুর্বলতার লক্ষণ। মানসিকভাবে দুর্বল মানুষ ব্যর্থতা নিতে পারে না। মানসিকভাবে সবল
- নাম : বাঘবন্দি মিসির আলি
- লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
- প্রকাশনী: : অনন্যা
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 88
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9844121787
- বান্ডিং : hard cover
- শেষ প্রকাশ : 2012