
নুর-এ ফানা
আত্মহত্যা নাকি আত্মার রূপান্তর? মুক্তি নাকি এক ভয়ংকর বিভ্রম?’ শহরে একের পর এক অসম্ভব মৃত্যু ঘটছে। সফল, প্রভাবশালী সেইসব লোকজন, যাদের জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোনো কারণই নেই, তারাই বেছে নিচ্ছে এক শীতল, প্রশান্তিময় সমাপ্তি। পুলিশের খাতায় এগুলো সাধারণ কেস, কিন্তু ডিবি পুলিশের বিশেষ উপদেষ্টা জামিল চৌধুরীর কাছে নয়।
জামিলের আছে এক অভিশপ্ত ক্ষমতা। সে মানুষের আবেগ আর নিয়তকে দেখতে পায় জটিল নকশা হিসেবে। আর প্রতিটি ঘটনাস্থলে গিয়ে সে একই স্বাক্ষর দেখতে পাচ্ছে: এক আরোপিত, প্রাণহীন প্রশান্তির নকশা। সে জানে, পর্দার আড়ালে আছে এক ভয়ংকর আত্মার কারিগর। এক ছায়ামূর্তি, যে ধর্ম আর দর্শনকে অস্ত্র বানিয়ে শিকার করে চলেছে পথভ্রষ্ট আত্মাদের। সে মৃত্যুকে বলে ‘ফানা’। অর্থাৎ, স্রষ্টার নুরের মাঝে বিলীন হয়ে যাওয়া।
এই মনস্তাত্ত্বিক শিল্পীকে ধরতে হলে জামিলকে স্বেচ্ছায় হতে হবে তার পরবর্তী শিকার। তাকে ডুব দিতে হবে এক ভয়ংকর জগতে, যেখানে বিশ্বাস এক মারণাস্ত্র। এই বিপজ্জনক যাত্রা তাকে একদিকে যেমন টেনে নিয়ে যায় মক্কা-মদিনার পবিত্র ভূমিতে, যেখানে সে খুঁজে পায় তার নিজের আত্মার আলো, তেমনই অন্যদিকে তাকে দাঁড় করিয়ে দেয় তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।
যে জামিল নিজেই ছিল বিশ্বাসহীন এক শূন্য আত্মা, সে কি পারবে শয়তানের দেখানো ‘ফানা’-র বিভ্রম ভেদ করে সত্যিকারের নুর-এ ফানা-র সন্ধান দিতে? নুর-এ ফানা’ আলো ও অন্ধকারের এক ভয়ংকর মনস্তাত্ত্বিক চাল এবং এক ভাঙা আত্মার তার রবের ভালোবাসায় বিলীন হয়ে যাওয়ার উপাখ্যান।