

আড়ে বিভঙ্গে বিচার
দেশভাগ-উত্তর বাংলার অনেক কবির মধ্যে অল্প কজনই কেবল পেরেছিলেন শিল্পের অটল পথে শেষ পর্যন্ত হেঁটে যেতে; যেতে যেতেই তাঁরা ভেঙেছিলেন, ভাঙতে ভাঙতেই গড়ে নিয়েছিলেন সব কিছু। সে যেন নিরন্তর এক নিগেশান: পুরানো বাগ্রীতি ভাঙা, প্রথা-সংস্কার ভাঙা; কবি যে কাব্য হাতে উঁচু বেদিতে দাঁড়ানো বিশিষ্ট মানুষ, কবিতা যে কথামাত্র নয় স্তোত্র: সত্যম শিবম সুন্দরম, সেই স্তোত্রসমূহ যে মহান শিল্প; তাঁরা পালটে দিয়েছিলেন পূর্ববর্তী কবিগণের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সব ধারণা; প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মানবঃ পশ্য কাব্যং ন মমার ন জীর্যতি।
তার মধ্যে প্রাতিস্বিক সাত কবির স্বাতন্ত্র্য নির্ণায়ক মুখশ্রী ও মর্মমথিত মুহূর্তের বিবরণের আড়ে গড়ে ওঠা বিভঙ্গে তাঁদের স্বনির্ণীত নন্দন, সেখানে চিত্রার্পিত অর্ধ-শতাব্দীর স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের রূপ আর আলোর অন্বেষায় জীবন ঘষে জ্বালানো আগুনে নিজেই জ্বলে যাবার বিষাদময় বিভাবকে কেন্দ্রে রেখে এই বই।
কাব্য বিশ্লেষণের অদীক্ষিত প্রবণতা থেকে যা মুক্ত, আশ্রিত আকল্প চেতনায় তন্নিষ্ঠ এবং ভাষাদর্শন, চিরন্তন নান্দনিক মূল্যমান ও শিল্পবিচারে প্রাণসঞ্চারী তাত্ত্বিক প্রণালির বিশ্বস্ততায় সংবেদনশীল সকল মনকে মর্মের উদারতায় উদ্বোধিত করতে সক্ষম।