
বিড়ালসাক্ষী
আস্ত চাঁদটা জানালার গ্রিল উপেক্ষা করে অনায়েসে ঘরের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। এক পশলা চাঁদের আলো নীলরঙা দেয়ালের রুমটিতে সফেদ আভার পসরা সাজিয়েছে, যার ফলে পুরো রুম জুড়ে দেখা মিলছে আসমানী রঙের তন্তুর নাচ। সাথে বইছে অক্টোবরের সহনীয় কনকনে বাতাস।
দেয়ালে ঝোলানো ঘড়ির ছোট কাঁটা ১ সংখ্যাটির মাথায় আশির্বাদ দিতে শুরু করেছে। কিন্তু উজানের চোখের পাতায় ঘুম ভর করেনি তখনো। ঘরের কোণে একটা নীল রঙা টেবিল। টেবিলের ওপর গর্দান বাঁকানো ল্যাম্পের মৃদু আলো, সামনে দিস্তা কাগজ, তার বাম হাতে কলম, ১০ ইঞ্জি সাইজের একটা কাঠের ম্যানিকিন অনড় দাঁড়িয়ে আছে। উজান ওকে একটা নামও দিয়েছে, বোইস। উজানের ডান পাশে অর্ধেক পূর্ণ একটি কাপ। কাপে দুধ চা, আদার কয়েকটি কুচি চায়ে ভাসছে। কাপ থেকে ধোঁয়া উড়ছে না, জুড়িয়ে গিয়েছে। উজান একটি লাইন লিখছে আবার পরক্ষণেই কেটে দিচ্ছে।
কোনো মতেই লেখা আসছে না তার হাতে। কেননা মনঃপুত গল্প নেই তার স্টকে। কিন্তু তার যে খুব লিখতে ইচ্ছা করছে! লেখালেখি রন্ধ্রে মিশে আছে উজানের। সারাটা দিন তার কেটে যায় গল্পের খোঁজে। মানুষের জীবনের জীবন্ত সব গল্প ঠাই পায় তার দিস্তা কাগজে। ৩টি বই ইতিমধ্যেই বাজারে এসেছে কিন্তু সফলতার মুখ লুকিয়ে আছে কোনো এক শৈবাল পড়া দেয়ালের আড়ালে। উজান অবশ্য এর তোয়াক্কা করে না। কেননা উজান লেখালেখি করে ভিন্ন এক উদ্দেশ্যে। সেই উদ্দেশ্য সে লুকিয়ে রেখেছে তার মস্তিষ্কের গহীনের এক হিডেন ফোল্ডারে! আজ আর লেখালেখি হচ্ছে না বলেই ধরে নিয়েছে উজান। তাই চাঁদের বেহায়া আলো, লুটেরা বাতাস, দিস্তা কাগজ আর চায়ের কাপখানা ঘরে ফেলে রেখে চটের সাইড।
- নাম : বিড়ালসাক্ষী
- লেখক: শান ইলাহী
- প্রকাশনী: : ধূসর প্রকাশ
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 160
- ভাষা : bangla
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2025