লাইফ আফটার লাইফ
"নয়নতারা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
বাচ্চাটা মেয়ে! পিঙ্গল চুল, ঝুঁটি করে রাখা ফিতা দিয়ে। আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে মেয়েটিকে। সূচনা জিজ্ঞেস করলো, ‘নাম কী সোনা?’ বাচ্চাটা করুণ চোখে তাকাল। ঠোঁটগুলো যেন গোলাপের পাপড়ি, থরথর করে কাঁপছে। সূচনা আবার জিজ্ঞেস করলো, ‘সোনা ভয় পেয়েছিস?’ মাথা ডানে বামে ঘোরায় বাচ্চাটা। একবার ভুরু কোঁচকায়। মুখ দিয়ে অনুচ্চস্বরে কিছু একটা বলে, ‘না...না...ন...ন...’ কপালের ভাঁজগুলো মিশিয়ে দেবার ছলে সূচনা মেয়েটার কপালে হাত দিল, কপাল বেশ গরম। বাচ্চাটা ফিক করে হেসে দিল, হাসিটা কেমন অদ্ভুত। সূচনা খেয়াল করলো মেয়েটার পায়ের কড়ে আঙ্গুল নেই...এবং জিভটা কুচকুচে কালো। ইয়াল্লা! একি! বাচ্চাটার কি অসুখ? এমন অসুখ কি মানুষের হতে পারে! নাকি অন্যকিছু? শরীরটা সূচনার ঝাঁকি খায়, সে গুঙ্গিয়ে উঠে।
চমন হাসপাতালের জানালায় দাঁড়িয়ে যে দৃশ্য দেখছে তা অসহ্যকর- একটা বাচ্চা মেয়ে কাকের দুটো ছানাকে গলা টিপে ধরেছে, সাথে মরা কাকটাকে পায়ের তলায় পিষছে আর চমনের দিকে তাকিয়ে হাসছে। মেয়েটার চোখ মুখে ক্রুর হাসি। এর অর্থ কি?
সূচনা ভাবছিল নয়নতারা গাছগুলোর কথা, হঠাৎ ঘন্টার শব্দ পেয়ে সে লাফিয়ে উঠল। ঘণ্টার সাথে সাথে মন্ত্র পড়ার সুর কানে এলো- “ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম। ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।”
আমার সুযােগ হয়েছে ড. রেমন্ড মুডি রচিত 'লাইফ আফটার লাইফ (জীবনের পর জীবন) প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে গ্রন্থটি পাঠ করার এবং আমি আনন্দিত যে তরুণ পণ্ডিত সাহসিকতার সঙ্গে এ ধরনের নতুন একটি গবেষণাকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। আমি যেহেতু বিগত দুই দশক যাবৎ মৃত্যুপথযাত্রী অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিত্সা সেবা দিয়ে যাচ্ছি, আমার পক্ষে মৃত্যুকে কাছে থেকে দেখার সুযােগ হয়েছে। মৃত্যুর প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানার সুযােগ পেয়েছি, কিন্তু মৃত্যুর মুহূর্ত এবং যখন আমাদের রােগীদের মৃত বলে ঘােষণা করা নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। ড, মুডি যে গবেষণা করেছেন তা এই অমীমাংসিত প্রশ্ন সম্পর্কে চিন্তাশীল মানুষকে আলােকিত করবে এবং মৃত্যুর পর আরেকটি জীবন রয়েছে বলে আমরা দুই হাজার বছর যাবৎ যা শিখিয়ে আসছি তা নিশ্চিত করবে।
যদিও তিনি এমন দাবি করেননি যে তিনি মৃত্যু নিয়ে কাজ করেছেন, কিন্তু তার গবেষণার ফল থেকে এটা স্পষ্ট যে, কোনাে মরণাপন্ন রােগীকে তাত্ত্বিকভাবে অর্থাৎ ক্লিনিক্যালি মৃত ঘােষণার পরও পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে তার মাঝে এক ধরনের সচেতনতা কাজ করে। এ সম্পর্কে আমার নিজস্ব গবেষণার ফলাফলও অভিন্ন যে অনেক ক্ষেত্রে আমরা কোনাে রােগীকে বাঁচিয়ে তুলার সকল আশা ত্যাগ করার পর রােগী জীবিত হয়ে উঠেছেন, এবং এ ধরনের ঘটনাকে অলৌকিক বলে স্বীকার না করলেও অত্যাধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সূক্ষতায় দক্ষ চিকিৎসাবিদদেরকেও বিস্মিত করেছে।
- নাম : লাইফ আফটার লাইফ
- লেখক: রেইমন্ড এ মোডি এম ডি
- অনুবাদক: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু
- প্রকাশনী: : নালন্দা
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 144
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9789849547549
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2021