
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী - নিঃসঙ্গ গ্রহচারী
"বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিঃসঙ্গ গ্রহচারী"বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
একাকী কিশাের
সুহান হাতের ওপর মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশের রং নীলাভ কিন্তু নীল নয়। স্বচ্ছ কাচের মতাে। পৃথিবীর আকাশ নাকি নীল। গাঢ় নীল। সে কখনাে পৃথিবী দেখেনি। কিন্তু তবু সে জানে। তাকে ট্ৰিনি বলেছে। ট্ৰিনি তাকে আরাে অনেক কিছু বলেছে। পৃথিবীর নীল আকাশে নাকি সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। কখনাে কখনাে সেই মেঘ নাকি পুঞ্জিভূত হয়ে আসে, বিদ্যুতের ঝলকানিতে আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যায়, তারপর নাকি আকাশ কালাে করে বৃষ্টি আসে। দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি জন্ম দেয় গাছ। ট্ৰিনি বলেছে, পৃথিবীর গাছ নাকি সবুজ। গাঢ় সবুজ। সেই গাছে নাকি ফুল হয়। বিচিত্র রঙিন সব ফুল। ট্ৰিনি সব জানে। ট্রিনিকে পৃথিবীতে তৈরি করা হয়েছিল, তার কপােট্রনের ক্রিস্টাল ডিস্কে পৃথিবীর সব খবর রাখা আছে। ট্ৰিনি একটু একটু করে সুহানকে সব বলেছে। সুহান জানতে চায় না, তবু সে বলেছে । সুহানকে নাকি জানতে হবে। সুহান মানুষ। মানুষের জন্ম গ্রহ পৃথিবী। তাই সব মানুষকে নাকি পৃথিবীর কথা জানতে হয় । আকাশের দিকে তাকিয়ে পৃথিবীর কথা ভাবতে হয়।
সুহান তাই পাথরের ওপর শুয়ে শুয়ে কখনাে কখনাে পৃথিবীর কথা ভাবে। ভাবতে চায় না, তবু সে ভাবে । ট্ৰিনি বলেছে, তাকে ভাবতে হবে। পৃথিবীর কথা ভাবতে হবে, মানুষের কথা ভাবতে হবে। ভেবে ভেবে তাকে সত্যিকার মানুষের মতাে হতে হবে। যদি কোনদিন মানুষের সাথে দেখা হয় তারা যেন সুহানকে দেখে চমকে না ওঠে। ভয় পেয়ে চিৎকার না করে ওঠে।
সুহান এক সময় ট্রিনির কথা বিশ্বাস করত। ভাবত, সত্যিই বুঝি তার একদিন মানুষের সাথে দেখা হবে। দেখা হলে কী বলবে সব ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু তার মানুষের সাথে দেখা হয়নি। সে জানে কোনদিন মানুষের সাথে তার দেখা হবে না। স্বচ্ছ কাচের মতাে নীলাভ আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে একদিন তার জীবন শেষ হয়ে যাবে। দুই সূর্যের এই গ্রহটিতে
- নাম : বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী - নিঃসঙ্গ গ্রহচারী
- লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
- প্রকাশনী: : সময় প্রকাশন
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 95
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9844580722
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2017