মস্তিষ্কের ক্যানভাস
''মস্তিষ্কের ক্যানভাস'' বই এর ফ্ল্যাপ এ বইটা গল্পের নয় কিংবা দর্শনেরও নয়। সাংঘর্ষিক অনুভূতির সংকলন বলা যেতে পারে। নাগরিক জীবনে প্রতিনিয়ত অনেক কিছু দেখেও না দেখার ভান করার বোকামি চতুরতার অসহায় বহিঃপ্রকাশ। কেউ অনুভূতি লুকিয়ে রাখে, কেউ চুপচাপ ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লিখে রাখে, কেউবা ইন্টারনেটে প্রকাশ করে সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে চায়।
বইয়ের কোথাও কোনো ধারাবাহিকতা নেই, নেই কোনো পক্ষপাত। একবার ঘর্মাক্ত রিকশাচালকের মাথায় বয়ে চলা কষ্টের কথা বলা হয়েছে তো আরেকবার শিল্পাঞ্চলের জ্যামে। নিজের বিশাল পাজেরো গাড়িতে বিরক্তি নিয়ে বসে থাকা শিল্পপতির মাথায় কী চিন্তা চলছে তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। কখনো নারীর দৈনন্দিন সংগ্রামের কথা আবার কখানো। ক্রিকেটে জেতার আনন্দ আর ফুটবলে হেরে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করা হয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে। একবার অনেক আশাবাদী আবার পরেরবার হতাশার কথা বলা হয়েছে। সাধারণ বাংলাদেশি মস্তিষ্কে নিউরন সেলের বিক্রিয়াগুলোকে কালো হরফে আঁকার চেষ্টায় এই বই। ভূমিকা আমি লেখক নই।
এই বইয়ের কোনো পাতায় কোনো ধারাবাহিকতা নেই, বিষয় নির্বাচনে না বিষয়ের দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে বা শব্দ সংখ্যায়। গত ১০ বছর। ধরে একটু একটু করে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে এটা-সেটা নিয়ে চারপাশ দেখে অনেক কিছু ভেবেছি বুঝেছি চেয়েছি, তারপর লিখে রেখেছি। সেসব কথাই এই বইয়ের পাতায় পাতায় ছাপা। ধারাবাহিকতা নেই কোথাও। মলাটে নিজের ছবি, স্পষ্ট করে দেয়, আমি একজন প্রচণ্ড নার্সিসিস্ট, এটা শিকার করতে একটুও দ্বিধা নেই আমার। রাজধানীতে পা রেখেছিলাম ৭০০ টাকা নিয়ে, নিজের গল্পটাই আমার দৈনন্দিন অনুপ্রেরণা।
নিজের অবস্থান পরিবর্তনের সাথে সাথে শেকড়টাকে আরো বেশি করে আঁকড়ে ধরে তারপর আমি ভাবার আর বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। তাই পাতা উল্টানোর আগে আরেকবার অনুরোধ ধাক্কা লাগলে ক্ষমা করে দেবেন। আমি তরুণ বয়সের অনেকটা সময় সমুদ্রে কাটিয়েছি যুদ্ধজাহাজে, তারপর রাজধানীতে এসে পড়েছি ব্যবসা প্রশাসন। আমার মননের অনেকটা জায়গা জুড়েই আছে লাভ-লোকসান মধ্যবিত্ত বাঙালির সব রকমের দোষ-গুণ আর লাভের সাথে বসবাস আমার প্রতিদিন। এই বইটা কোনো গল্পের নয়, কবিতার না, ভারিক্কি কোনো প্রবন্ধ সংকলনও নয়। স্রেফ আমার ভাবনাগুলো। কোনোটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা, কোনোটা একটা অণুগল্প, কোনোটা মনের কোণে জমে থাকা অনুযোগে, কোনোটা আবার বাংলাদেশকে প্রচণ্ড ভালোবাসা একেকজন নাগরিকের, যার আবার দেশের প্রতি চাওয়াটা হয়তো একটু বেশি। এই বইয়ের যেসব শব্দ মোটা দাগে লিখা সেখানে পাঠককে সবচেয়ে বেশি সময় দেয়ার অনুরোধ করছি।
বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই আমার বইয়ের প্রকাশক তাসনোভা আদিবা সেঁজুতি আপাকে। যিনি টানা এক বছর আমাকে অনেকটা ধরে বেঁধেই বইটি শেষ করতে বাধ্য করেছেন। বিশেষ করে আতাউর সুন্ময়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার ভাবনাগুলোকে কখনো ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে, কখনো ইউটিউব ভিডিও থেকে, কখনো বক্তৃতা থেকে এনে সংকলন করতে সাহায্য করার জন্য।
- নাম : মস্তিষ্কের ক্যানভাস
- লেখক: সোলায়মান সুখন
- প্রকাশনী: : অধ্যয়ন
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 136
- ভাষা : bangla
- বান্ডিং : hard cover
- ISBN : 9789848072165
- প্রথম প্রকাশ: 2019