টি-রেক্সের সন্ধানে
"টি-রেক্সের সন্ধানে"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: ১. আমাদের বাসা মালিবাগের মােড়ে যে নতুন চায়ের দোকানটা খুলেছে, তার ডান পাশের রাস্তাটা ধরে গিয়ে প্রথম গলিটার সামনে যে ময়লা দোতলা দালানটি চোখে পড়ে সেটা আমাদের বাসা। আমাদের মানে ঠিক আমাদের না, আমার চাচাদের। আমার চাচারা ছয় ভাই। তার মাঝে চারজন এখানে থাকেন। যে দু’জন থাকেন না তার একজন আমার বাবা। বাবার থাকার কোন উপায় নেই, কারণ বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন।
আমি যখন মায়ের পেটে, তখন বাবা একটা ক্রেনের ওপর থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। ব্রেনের মাঝে চোট লেগেছিল। দুই দিন হাসপাতালে থেকে মরে গেলেন। আমার জন্মের বছরে বাবা মারা গেছেন বলে আমাকে ধরা হয় অপয়া। শুনলে মনে দুঃখ পাব বলে কেউ সােজাসুজি বলে না, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলে। তবু দিনে কয়েকবার করে আমাকে শুনতে হয়। আমি অবশ্যি দুঃখ দুঃখ পাই না। বাবা মারা যাবার পর আমার মা একটু অন্য রকম হয়ে গেছেন।
অন্যেরা বলে মাথা খারাপের মত, কিন্তু সেটা সত্যি নয়। দিনরাত শুধু মােটা মােটা বই পড়েন। আমাকে সেজন্য বেশি দেখেন শুনেননি, আমি নিজে নিজেই বড় হয়েছি। নিজে নিজে বড় হলে মনে হয়, মানুষের বেশি দুঃখকষ্ট হয় না। সে জন্যে আমার বেশি দুঃখকষ্ট নেই। আরেকজন যে চাচা এই বাসায় থাকেন না, তিনি হচ্ছেন হীরা চাচা। হীরা চাচা আমেরিকা থাকেন। সেখানে নাকি লস এঞ্জেলস বলে একটা শহর আছে। সেই শহরে নাকি একটা পাহাড় আছে। তার কাছে নাকি একটা সমুদ্র আছে। সেই সমুদ্রের কাছে একটা ছবির মত বাসায় থাকেন হীরা চাচা। হীরা চাচাকে আমি অনেকদিন দেখি না। শেষবার যখন দেখেছি তখন আমি অনেক ছােট, পরিষ্কার করে মনে নেই। শুধু মনে আছে, তার ঠিক আমার সমান একটা ছেলে, সে দিনরাত শুধু টা টা করে চেঁচাচ্ছে, আর সবাই সেটা নিয়ে খুব ব্যস্ত
- নাম : টি-রেক্সের সন্ধানে
- লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
- প্রকাশনী: : জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 80
- ভাষা : bangla
- বান্ডিং : hard cover
- শেষ প্রকাশ : 2015