
অপুর দুরন্ত কৈশোর
জঙ্গলের পাশেই একটা পরিত্যক্ত পোড়াবাড়ি। বাড়ির ভেতরে একটা পৌরাণিক ভয়ংকর মূর্তি। দূর থেকে মূর্তিটা দেখতে অনেক জীবন্ত মনে হয়। যেন ড্রাকুলার চোখের মতো চোখ থেকে রক্ত ঝরছে। দাঁত চোয়ালের বাইরের দিকে বের হয়ে আসছে। নাক সারস পাখির মতো বাঁকা। হাত ও পায়ের নখ হিংস্র বাঘের মতো। তাকালেই মনে হয় এখনই থাবা দিয়ে ঘাড়ের সব রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে।
কী ভয়ংকর তাকানোর দৃষ্টি! একবারে অন্তরাত্মা পর্যন্ত কেঁপে যায়। কথিত আছে তান্ত্রিক প্রতি অমাবস্যা রাতে নরপশু বলি দেয় এই পোড়াবাড়িতে। অদ্ভুত বাদ্যযন্ত্রের শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। ভোরবেলায় আর তাদের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। শুধু পড়ে থাকে পশুর কঙ্কাল। এই নিয়ে বহু জনশ্রুতি রয়েছে। তার পরও অপু ও তপুর এখানে পাখি ধরার জন্য আসা চাই। অন্য রকম টান আছে এই পোড়াবাড়ির প্রতি।
জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হাঁটার সময় দুই দোস্ত দূর থেকে হঠাৎ দেখল পোড়াবাড়ির কোটরে টিয়া পাখির বাসা। একজন আরেকজনের দিকে তাকাতে থাকে। দুজনের চোখেই খুশির অদ্ভুত এক উন্মত্ততা। টিয়া পাখির বাসাটা একদম ওপরের কোটরে। দুজনই ভাঙা দেয়াল বেয়ে কোটরের ওপরে উঠতে লাগল। টিয়ার ছানা ওদের দেখে ভয়ে চিঁচিঁ করতে লাগল। মা পাখিটা আশপাশেই ছিল। মাঝে মাঝে ছোঁ করে তেড়ে আসে ওদের ঠোকর দিতে। অপু বলল-
বাচ্চা থাউক, নেওন লাগব না দোস্ত! বাদ দে তুই। দেখ কেমন কইরা মা পাখিটা কানতাছে। আরে, কী কস দোস্ত? কত কষ্ট করে ওপরে উঠলাম। আর তুই কস নেওন লাগব না?
তপু নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অপু মানা করছে? বিশ্বাস হলো না তপুর। অপু আবার বলল-
দেখছস দোস্ত, কী সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চাগুলান! এখনো গায়ে পালক গজায় নাই। আরে, তুই নে আর না নে, আমি কিন্তু এক জোড়া ঠিকই নিমু। কত্ত সুন্দর বাচ্চাগুলান!
পরে নিসনে, দেখ বাচ্চাগুলান কত্ত ছোট! এহন ভালো কইরা নিজে খাইতেও শিখে নাইরে তপু। রেগে গিয়ে অপু প্রসঙ্গ ঘোরানোর জন্য সাথে সাথে বলে উঠল।
- নাম : অপুর দুরন্ত কৈশোর
- লেখক: লাবণী ইসলাম
- প্রকাশনী: : চমনপ্রকাশ
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 96
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9789849079705
- প্রথম প্রকাশ: 2014