
আমি কওমীওয়ালা
সাধারণত তিন পদ্ধতিতে আমার দেশের মানুষ শিক্ষা অর্জন করেন। হয়ত কওমী মাদরাসা, নয়তো আলিয়া মাদরাসা, আর না হয় স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি থেকে।
কম-বেশি সকলেই জেনারেল শিক্ষা সম্পর্কে অবগত রয়েছি। পক্ষান্তরে কওমী শিক্ষাকে দূরে ঠেলে রেখেছি। যার কারণে অনেকেই মনে করে থাকেন, কওমী মাদরাসায় শুধু কুরআন পড়ানো হয়। সেখানের ছাত্ররা মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন হওয়া আর দাওয়াত খাওয়ার জন্যই পড়া-লেখা করে। তাদের কোন উজ্জ্বল ভবিষ্যত নেই। অন্যের পয়সায় আস্থা রেখে জীবন ধারণ করে।
এমনি হাজারো জানা-অজানা কানাঘুষার মাঝে কওমী শিক্ষানীতি এবং কওমী উস্তাদ-ছাত্র নিয়ে উপযুক্ত জবাব মানুষের মাঝে তুলে ধরা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তাই আমার বন্ধুগন আর্জি জানাল, এই বিষয়ের উপর কিছু লিখার জন্য। আমারও ইচ্ছা ছিল, যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আজও কেউ কলম ধরেনি অথবা বিস্তারিত আলোচনা করেনি, সেই বিষয়গুলো সমাজে তুলে ধরার চেষ্টা করা। সেই চেষ্টায় আমার এই বই লিখা।
আমি কোন কবি, সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক নই। তবে আমার লেখা অনেক পাঠকের ভাল লেগে বলে শুনেছি। মনে হয় না আপনি আমার লেখায় কোন সাহিত্যিকতা, কোন মাধুরতা, কোন প্রাণ খুঁজে পাবেন। তবে আমার মন বলে, এই বই থেকে আপনি যা হাসিল করতে চাইবেন, তা পেয়ে যাবেন।
কোন শিক্ষা বা কাউকে আঘাত হানার জন্য বইটি লিপিবদ্ধ করিনি। শুধু যথার্থ শিক্ষা এবং সত্য ব্যবস্থা, সমাজের সম্মুখে তুলে ধরাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। এই বইটি পড়ার ক্ষেত্রে সর্বস্তরের মানুষের জন্য বুঝতে সহজ হয়, তাই যতটা সাবলীল ভাষা ব্যবহার করা যায়, ততটাই করার চেষ্টা করেছি। বইটি পড়ার ক্ষেত্রে কেউ যেন কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সেই দিকেও লক্ষ্য রেখেছি।
বইটিতে একটা কথাও অহেতুক লিপিবদ্ধ করে নি। প্রতিটি বাক্যের পেছনে কারণ নিহিত আছে। যার দরুন অনেক সময় লেখার মাধুর্য নষ্ট হয়েছে বলে মনে হবে। তারপরও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ছেড়ে দেয়নি।
এই বইয়ে আপনি পাবেন, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, আলিয়া মাদরাসা-সহ কওমী মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থার বেশ কিছু আলোচনা। একজন আদর্শ বাবার চরিত্র। দুই ভাইয়ের বন্ধন। ত্যাগ করলেই বড় হওয়া যায়। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপায়। সন্তানকে আদর্শ মানুষ বানানোর কৌশল। কোন শিক্ষা অর্জন করলে শেষ জীবনে দেখা দিবে সুখের ফসল। বাস্তবতার সাথে কিভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে।
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ মেনে কিভাবে জীবনে আনন্দময় করা যাবে। কিছু রোমান্টিকতা। কিছু বেদনার কথা। কিছু অজানা তথ্য সহ কওমী মাদরাসা এবং হুজুর নিয়ে বহু প্রশ্নের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়ে লিখা হয়েছে মন জুড়ানো ইসলামী উপন্যাস। যার চাহিদা গত সংস্করণ থেকেই বুঝে আসে।
সকলের প্রতি আমার অনুরোধ এবং আহ্বান; সব শ্রেণীর মানুষ একবার হলেও বইটি পড়ে দেখবেন। বইটি পড়ার পরে আপনার মনের ভেতরে কওমী শিক্ষা এবং হুজুরদের নিয়ে জমে থাকা বহু প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
বিশেষ করে কওমী মাদরাসার ছাত্রদের জন্য এই বইটি ‘উত্তপ্ত মরুভূমির তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির সামনে পানির ন্যায়’ কাজ করবে বলে মনে হয়েছে।
কেননা এই উপন্যাসে কওমী মাদরাসা এবং হুজুরদের নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব তুলে ধরা হয়েছে। কওমী মাদরাসা শিক্ষানীতি ‘নূরানী থেকে তাকমিল (মাস্টার্স) পর্যন্ত, প্রতিটা বিভাগের পড়া-লেখার চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
বাকিটা আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন।
- নাম : আমি কওমীওয়ালা
- লেখক: মুস্তাফিজ ইবনে আনির
- প্রকাশনী: : কলরব প্রকাশন
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 204
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9789843730077
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2019