আদাবুল মাসাজিদ
বইটি হতে কিছু কথা -
হযরত আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন এক ইহুদি জ্ঞানী ব্যক্তি হুজুর পাক (সা.) হতে জিজ্ঞেস করেন জমিনের মধ্যে সর্বোত্তম জায়গা কোনটি? হুজুর পাক (সা.) বললেন- তুমি জিব্রাঈল (আ.) আসার আগ পর্যন্ত চুপ থাক। হুজুর পাক (সা.) চুপ থাকলেন এবং ঐ ইহুদি ব্যক্তিও চুপ থাকলেন। অত:পর জিব্রাঈল (আ.) আসলেন। তারপর হুজুর পাক (সা.) তার থেকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন জিব্রাঈল (আ.) বললেন- জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি জিজ্ঞেসকারী থেকে বেশী জ্ঞাত নয়। তারপর জিব্রাঈল (আ.) বললেন- ইয়া রাসূল (সা.) আমি আল্লাহর এত নিকটবর্তী হয়ে ছিলাম যতটা ইতিপূর্বে হইনি। হুজুর পাক (সা.) জিজ্ঞেস করলেন কত নিকটে? জিব্রাঈল (আ.) বললেন আমার এবং আল্লাহর মাঝে সত্তর হাজার নূরের পর্দা ছিল। তারপর আল্লাহ তায়ালা বলেন জমিনের মধ্যে সর্বোত্তম জায়গা মসজিদ এবং সর্ব নিকৃষ্ট জায়গা বাজার। [মুসলিম, মিশকাত]
যে সমস্ত কথা মসজিদের বাহিরে বলা জায়েয, সে সমস্ত কথা মসজিদে বলা নিষেধ এবং যে সমস্ত কথা মসজিদের বাহিরে বলা নিষেধ সে সমস্ত কথা মসজিদে বলা কঠোর নিষেধ। ফাতহুল ক্বদির নামক গ্রন্থে আছে যে, মসজিদের মধ্যে দুুনিয়াবী কথা বলা নেকী সমূহকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয় যেমন আগুন লাকড়ীকে জ্বালিয়ে ফেলে এবং মাদখাল লি-ইবনে হাজেব গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লামা শফি (রহ.) আদাবুল মাসাজিদ নামক গ্রন্থে লিখেন, যখন কোন ব্যক্তি মসজিদের মধ্যে দুনিয়াবী কথা বলা শুরু করে তখন ফেরেশতারা তাকে প্রথমে বলে হে আল্লাহর বন্ধু চুপ থাক। তারপর যদি চুপ না হয় তাহলে বলে হে আল্লাহর শত্র“ চুপ থাক, তারপরও যদি কথা বলে তাহলে বলে হে আল্লাহর অভিশপ্ত ব্যক্তি চুপ থাক।
মাসয়ালা: মসজিদে উচ্চ আওয়াজে কোরআন তেলাওয়াত এবং উচ্চ আওয়াজে জিকির করা সব না জায়েয। তবে হ্যাঁ যদি মসজিদে কোন ব্যক্তি নামাজ অথবা তাসবীহে লিপ্ত না থাকে তাহলে কতেক উলামা জায়েয বলেছেন। আবার কিছু উলামা সর্ব অবস্থায় উচ্চ আওয়াজে জিকির ও তেলাওয়াত করা নাজায়েয বলেছেন। সতর্কতা: আফসোস বর্তমান মানুষ মসজিদের আদব থেকে বড়ই অমনোযুগী, অধিকাংশ মানুষ মসজিদে এমনভাবে শোরগোল করে যেমন- মঞ্চে, বাজার ইত্যাদির মধ্যেও হয় না। অথচ শরীয়তে উচ্চ আওয়াজে তেলাওয়াত ও যিকিরকে পর্যন্ত নাজায়েজ বলেছেন। নবী করিম (সা.) বলেন বাজারের হট্টগোল থেকে বেঁচে থাক এবং মসজিদকে দুনিয়াবী কথাবার্তা দ্বারা বাজারের সাদৃশ্য করিও না সুতরাং উপরোল্লেখিত আলোচনা দ্বারা মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলার পরিণাম সম্পর্কে জানা গেল। তাই আমাদের সকলের উচিৎ এর থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এর থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। (আমিন)
- নাম : আদাবুল মাসাজিদ
- সম্পাদনা: হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান
- লেখক: মাওলানা মুফতী মুহম্মদ শফী রহ.
- তত্তাবধান ও নির্দেশনা: হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.
- প্রকাশনী: : আল-কাউসার প্রকাশনী
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 77
- ভাষা : bangla
- প্রথম প্রকাশ: 1995