
মেধাতন্ত্র: দর্শন, সমাজ ও রাজনীতি
মেধাতন্ত্র হলো এমন একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্থান যেখানে ব্যক্তির সফলতা, অবস্থান ও মর্যাদা নির্ভর করে ব্যক্তির মেধা, দক্ষতা ও সামর্থ্যরে ওপর। এখানে ব্যক্তির সামাজিক শ্রেণি, পারিবারিক ঐতিহ্য ও অর্জিত বা প্রাপ্ত সম্পদ কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না। ন্যায্যতা ও দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ধারণাটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে। ধারণাটির দার্শনিক ভিত্তি হলো ব্যক্তির সামর্থ্যরে ওপর আস্থা নৈতিক ভিত্তি হলো পক্ষপাতহীন প্রতিযোগিতা ও সুযোগের সমতা এবং রাজনৈতিক ভিত্তি হলো সকলের সমান অধিকার। মেধাতান্ত্রিক সামাজিক সংস্থানে কোনো ব্যক্তি নিজেকে বঞ্চিত মনে করেন না।
একটি আদর্শ মেধাভিত্তিক সমাজে সকল প্রকার দুর্নীতি পরিহার করে স্বচ্ছ, বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় সামাজিক গতিময়তা অব্যাহত রাখা যায়। এটি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার একটি প্রচলিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল লক্ষণা।রাজনীতির ক্ষেত্রে মেধাতন্ত্র একটি কাঠামো ও উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে যাতে জনবান্ধব, প্রতিশ্রুতিশীল, ও দায়িত্ববান রাজনৈতিক কর্মী নির্বাচন করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী ‘রাজনীতিতন্ত্র’ এমন একটি কৃষ্ণগহ্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে যা সকল প্রকার সামাজিক শুভ উদ্যোগকে গিলে খায়।
এর থেকে মুক্তির একটি প্রয়োজনীয় ও বাস্তব উপায় হলো রাজনৈতিক মেধাতন্ত্রের প্রচলন।এই দার্শনিক ভাবনার প্রকাশ রয়েছে মাসুদ আলমের বর্তমান গ্রন্থের প্রবন্ধগুলোতে। বিকাশমান যে-কোনো রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বোঝার জন্য এই বই সহায়ক হবে বলে ধারণা করা যায়।