
মুখতাসারুল কুদুরী
مقدمة ~ ভূমিকা
শরীয়ত ও তার লক্ষ্য মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি ও মুক্তির নিশ্চয়তা নিয়ে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর পক্ষ থেকে যে দীন বা জীবন-বিধান আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ -এর প্রতি নাযিল হয়েছে, তাকে শরীয়ত বলে। সুতরাং পরকালের নাজাত ও মুক্তির জন্য এবং পরম সুখ-শান্তিময় জীবন লাভের জন্য পূর্বশর্ত ও প্রত্যেকের জন্য জরুরী হলো শরীয়ত তথা আল্লাহর হুকুম ও নবী করীম-এর তরীকা জেনে সে অনুযায়ী জীবন যাপন করা। এই শরীয়তের বিধানাবলিকে আহকামে শারঈয়্যাহ বলে। শরীয়তের এ বিধানগুলো প্রধানত দুইভাগে বিভক্ত- ১. আহকামে আসলিয়্যাহ বা মৌলিক বিধানাবলি, ২. আহকামে ফারঈয়্যাহ তথা শাখাগত বিধি-বিধান।
শরীয়তের যেসব বিষয় মানুষের আকীদা-বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত, অর্থাৎ যেগুলো বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা প্রকাশ পায় না; বরং আন্তরিক বিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, সেগুলোকে আহকামে আসলিয়্যাহ তথা মৌলিক বিধি-বিধান বলে। যেমন- এক আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর ফেরেশতাগণের অস্তিত্ব, রিসালাত, কবরের আজাব, হাশর, মীযান, পুলসিরাত, জান্নাত- জাহান্নাম ইত্যাদির সত্যতা সম্পর্কে বিশ্বাস স্থাপন করে এগুলো মেনে নেওয়া মুমিন হওয়ার অন্যতম প্রাথমিক শর্ত ও অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। এটাকে পরিভাষায় আকায়েদ বলে। আর যে সমস্ত বিষয়ের সম্পর্ক দৈনন্দিন জীবনের কাজ-কর্মের সাথে, সেগুলোকে আহকামে ফারঈয়্যা বা শাখাগত বিধি-বিধান বলে। যেমন নামায, রোযা, হজ, যাকাত, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিবাহ-শাদী, প্রশাসন, বিচার-আচার ও মামলা-মুকদ্দমা প্রভৃতি।
প্রথম প্রকারের বিধানগুলো দ্বিতীয় প্রকারের বিধানাবলির মূলভিত্তি। কোনো ব্যক্তি প্রথম প্রকারভুক্ত বিষয়গুলোর প্রতি আস্থা-বিশ্বাস স্থাপনের পরই দ্বিতীয় প্রকার বিধানগুলো পালনে আদিষ্ট হয়; তার পূর্বে নয়। এদিক বিবেচনায় আকীদা-বিশ্বাস সংক্রান্ত বিধানগুলোকে ‘আসলিয়্যাহ’ বা ‘মৌলিক’ আর দ্বিতীয় প্রকার বিধানগুলোকে ‘ফারঈয়্যাহ’ বা ‘শাখাগত’ নামে অভিহিত করা হয়।
দ্বিতীয় প্রকারের বিধানগুলো আবার দুইভাগে বিভক্ত: ক. চরিত্র সংশোধনকারী বিধান, যা আদাব ও আখলাক নামে অভিহিত হয়ে থাকে। যেমন সালাম-কালাম, শয়ন-জাগরণ, আচরণ-উচ্চারণ প্রভৃতির নিয়ম-নীতি। এগুলো মূলত আকীদা-বিশ্বাস সংক্রান্ত আহকামেরই পরিপূরক। আকীদা-বিশ্বাস আর এ প্রকারের বিধানকে অবলম্বন করেই ইসলামী জীবনের সূচনা হয়।
খ. ব্যবহারিক জীবনের সাথে সম্পর্কিত বিধি-বিধান, যা ফিকহ (৬) নামে পরিচিত। সাধারণত শরীয়তের বিধান বলতে ফিকহের বিধানকেই বোঝানো হয়ে থাকে। ফিকহের সংজ্ঞা, আলোচ্য বিষয় ও উদ্দেশ্য -এর আভিধানিক অর্থ -এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে-
۵. الوَ الْعِلْمُ بِالشَّيْءِ وَالْقَهُمُ لَهُ কোনো কিছু জানা ও বোঝা, অবগত হওয়া ও উপলব্ধি করা(১( (2) قَالُوا يَا شُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ كَثِيرًا مِّمَّا تَقُوْلُ – Car PC অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- ٥) وَإِنْ مِّنْ شَيْءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمْدِهِ وَلَكِنْ لَّا تَفْقَهُونَ تَسْبِيحَهُمْ( ২. الشَّقُّ وَالْفَتْحُ তথা فلله শব্দের আসল অর্থ- উন্মুক্ত করা, স্পষ্ট করা, খোলা (৪(
১ . লিসানুল আরব
সূরা হুদ: আয়াত-৯১ ২
৩.সূরা ইসরা: আয়াত-৪৪
- নাম : মুখতাসারুল কুদুরী
- লেখক: আবুল হুসাইন আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আল-কুদুরী র.
- প্রকাশনী: : ফুলদানী প্রকাশনী
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 300
- ভাষা : arabic
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2024