অটোবায়োগ্রাফী অব জওহরলাল নেহরু
ফ্ল্যাপে লিখা কথা:
এই আত্মজীবনী শুধুমাত্র জওহরলাল নেহরুর আত্মজীবনীই নয়-পরাধীন ভারতবর্ষের আত্মজীবনীও বটে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পরিবারে তাঁর জন্ম। বৃটিশবিরোধী ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যে তাঁর আত্মপ্রকাশ। মনে হচ্ছিল যেন সমগ্র ভারতবর্ষই তাঁর অপেক্ষায় দিন গুনছে।
তিনি শুধুমাত্র রক্তমাংসের একজন মানুই ছিলেন না। তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের জনগনের আশা-আকাঙ্খা, লড়াই-সংগ্রামের এক জীবন্ত ইতিহাস। এই ইতিহাসই তিনি রচনা করেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে। তাঁর আত্মজীবনী পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি চিঠিতে লিখেছিলেন; ‘এই মাত্র তোমার মহাগ্রন্থ পড়া শেষ করেছি। তোমার এই কীর্তির দ্বারা আমি গভীরভাবে প্রভাবিত ও গৌরবান্বিত। গ্রন্থের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণের মধ্য দিয়ে মনুষ্যজাতির এমন এক নিগূঢ় ধারা প্রভাবিত যা সথ্যের জটিলতা অতিক্রম করে সেই ব্যক্তির কাছে নিয়ে যায় যিনি তাঁর কীর্তির চেয়ে মহৎ এবং পরিবেষ্টনের চেয়ে সত্য।”
শৈশবকালের কিছু স্মৃতি তিনি এভাবেই বলেন-
হোলীর দিনে সমগ্র নগরী উৎসব কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠত, আমরা রং ও আবীর ছিটিয়ে আনন্দ করতাম। দেওয়ালী রাত্রে গৃহে গৃহে সহস্র সহস্র স্তিমিত-ভাতি মৃৎপ্রদীপ জ্বলে উঠত। জন্মষ্টমীতে কংস-কারাগারে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উপলক্ষে মধ্যরাতে বিশেষ পূজার আয়োজন হত (আমাদের পক্ষে ততক্ষণ জেগে থাকা কঠিন হত)। দশহরা ও রামলীলায় শ্রীরামচন্দ্রে লঙ্কাবিজয় প্রভৃতি প্রাচীন কাহিনীর জীবন্ত চিত্র মূক অভিনেতাগণ কর্তৃক অভিনীত হত।
কিন্তু সমস্ত উৎসবের মধ্যে, আমার জন্মদিনের বাৎসরিক অনুষ্ঠানটিই আমার সর্বাধিক প্রিয় ছিল, এই উৎসবের নায়ক আমি স্বয়ং। এই দিন আমার আনন্দ ও উৎসাহের অন্ত থাকাত না। অতি প্রভ্যূষে এক বৃহৎ তুলাদণ্ডে গম ও অন্যান্য দ্রব্য দিয়ে আমাকে ওজন করা হত। ঐগুলি দরিদ্রদের মধ্যে বিতৃরিত হত। আমি উৎকৃষ্ট নব ভূষণে সজ্জিত হতাম এবং অনেক উপহার পেতাম। অপরাহ্নে নিমন্ত্রণ-সভা হত। আমার জন্যই এই উৎসব এই গর্বে আমার বুক ওভে উঠত। কিন্তু আমার বড় দুঃখ হত, জন্মদিন মাত্র বৎসরে একটি। যাতে ঘন-ঘন আমার জন্মোৎসব হয়, সেজন্য আবদার করতাম। তখন বুঝতাম না যে এমন দিন আসবে, যখন প্রত্যেকটি জন্মদিন বয়োবৃদ্ধির অপ্রীতিকর বার্তা স্মরণ করিয়ে দিবে।”
- নাম : অটোবায়োগ্রাফী অব জওহরলাল নেহরু
- অনুবাদক: কাজল চৌধুরী
- প্রকাশনী: : নালন্দা
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 520
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9847009300523
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2024