শুটিং এন এলিফেন্ট
একটু "সিরিয়াস" রাইটারদের মধ্যে আমার পড়া প্রথমজন সম্ভবত অরওয়েলই। 'গরীবেরা কেমনে মরে' প্রবন্ধে অরওয়েল বলতেসিলেন হাসপাতালে থাকাকালীন পড়া টেনিসনের কবিতা কেমনে তার অনেক বছর পর আবার মনে পড়ে। আমিও অরওয়েলরে প্রথম পড়সিলাম একটা হাসপাতালেই, সেবার অনুবাদে 'অ্যানিমেল ফার্ম' বইটা। আমার লেখা প্রথম বইয়ের রিভিউ ছিল 1984-এর উপর। 1984 বইটা আমার উপর প্রচুর প্রভাব ফেলসিল। বইটায় মানুষের শরীর ও মনের উপর স্টেটের জুলুমের অংশটা বাদেও, মানুষরে কন্ট্রোল করার সবচেয়ে কাজের উপায় যে তার ভাষারে কন্ট্রোল করা, সেইটাও মনে হয় তখনই বুঝতে পারসিলাম। কেমনে মানুষের চলতি মুখের ভাষা থেকে একের পর শব্দ ছাটাই কইরা একটা কন্সাইস ডিকশনারি মোতাবেক তারে নিজেরে প্রকাশ করতে বাধ্য করা হয়, কীভাবে রাষ্ট্র তার সকল জঘন্য কাজকামরে নরম-কোমল ইউফেমিজম দিয়া গ্রহণযোগ্য বানায়া তোলে এগুলা তখনই মনে খুব দাগ কাটসিল।
কিন্তু এই বইটা তার উপন্যাস নিয়া আদৌ না। এইখানে আছে অরওয়েলের ৪টা এসে। যেই পলিটিকাল কনশাসনেস অরওয়েলের ফিকশনেই এত দাপটের সাথে টের পাওয়া যায়, সেইটা তার প্রবন্ধে তো পাওয়া যাবেই। তবে একটা মজার ব্যাপার হইল, এই ৪টা এসে সহ অরওয়েলের প্রায় সব এসেই এসে হিসেবে যেমনে পড়া যায়, অটোবায়োগ্রাফিকাল নোট হিসেবেও পড়া যায়। মানে, স্রেফ তাত্ত্বিক আলাপের উপর প্রবন্ধ খাড়া করানোর ট্রেডিশনাল তরিকায় অরওয়েল অতটা বিশ্বাস রাখতেন না হয়তো। চাইলে যে পারতেন না, তা হয়তো না। কিন্তু অরওয়েল হয়তো বেশি পছন্দ নিজেরেই সমাজের ল্যান্ডস্কেপের একজন চরিত্র হিসাবে বসায়ে সেইখান থেকে সমাজরে এনালাইজ করা। ফলে তার বেশিরভাগ এসেই অনেকটাই তার প্র্যাক্টিকাল অভিজ্ঞতার উপর বেস করা। এইটা একদিকে যেমন তার স্পেশালিটি, আবার একইভাবে লিমিটেশনও হইতে পারে কিছু ক্ষেত্রে।
মাহীন হক
ঢাকা অক্টোবর,
২০২৩
- নাম : শুটিং এন এলিফেন্ট
- লেখক: জর্জ অরওয়েল
- অনুবাদক: মাহীন হক
- প্রকাশনী: : বাছবিচার বুকস
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 64
- ভাষা : bangla
- বান্ডিং : paperback
- প্রথম প্রকাশ: 2023