

চোখে দেখা কবরের আযাব
মৃত্যুর পর মানুষ এই পার্থিব জগত পাড়ি দিয়ে সরাসরি আখেরাতের জগতে চলে যায় না। এর পূর্বে রয়েছে আরেকটি জগত। অর্থাৎ মৃত্যুর পর হিসাব-নিকাশ দেওয়ার অর্থ হলো বরযখ জগতের হিসাব নিকাশ ও প্রতিদান বা শাস্তি। তাই কারো মৃত্যুর পর তাকে কবরস্থ না করা হলে বা লাশ পুড়িয়ে ফেললে অথবা সাগরে ভাসিয়ে দিলে কিংবা কেউ পশু ও জীবজন্তুর পেটে চলে গেলেও আলমে বরযখে তার হিসাব নিকাশ হবে। তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না।
এ কথা সবাই জানে ও মানে যে, যে ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছে, তাকে মৃত্যুবরণ করতেই হবে। কিন্তু মৃত্যুর পর কী হবে, তা কেউ জানে না। নিজ থেকে জানারও কোনো উপায় নেই। এটা শুধু আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। তিনি নবিদেরকে জানিয়েছেন, আমরা তা নবিদের কাছ থেকে জেনেছি। প্রত্যেক নবি তার জাতিকে জানিয়েছেন এবং প্রমাণ করে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ মৃত্যুপরবর্তী ঘাটিগুলো কী কী, কোন্ ঘাটিতে কৃতকর্মের কোন্ শাস্তি বা পুরস্কার অপেক্ষা করছে, সবই তাঁরা উম্মতের সামনে বর্ণনা করেছেন।
আমাদের নবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু সর্বশেষ নবি, তাই তিনি এ বিষয়গুলো খুবই বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। সবগুলো একত্রিত করলে বিরাট একটি কিতাব হয়ে যাবে।
কুরআন ও হাদিসে এ সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, তার সারাংশ হলো, মৃত্যুপরবর্তী জীবনে তিনটি অধ্যায় আসবে- ১. বরযখ অধ্যায়। ২. হাশর ও কেয়ামত অধ্যায়। ৩. জান্নাত ও জাহান্নাম অধ্যায়
১. বরযখ অধ্যায় এর পরিধি মৃত্যুর পর থেকে (কেয়ামত ও) পুনরুত্থানের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত। একে কবরের জগত বলা হয়। মৃত্যুর পর মানুষের দেহ দাফন হোক বা পুড়ে ছাই হোক, কিংবা জন্তুর পেটে যাক বা সাগরে ভাসুক- সর্বাবস্থায় তার রূহ বা প্রাণ অক্ষয় থাকে।
মৃত্যুর পর রূহ চলে যায় বরযখের জগতে। সেখানে ফেরেশতারা তাকে কিছু প্রশ্ন করে। যদি তার ঈমান ও আমলে সালেহ থাকে, তাহলে সঠিক উত্তর দিতে পারে। তখন ফেরেশতারা তাকে সুসংবাদ দিয়ে বলে, “তুমি কেয়ামত পর্যন্ত আরামে ঘুমোও।” কিন্তু সে যদি মুমিন না হয়, অথবা গুনাহগার মুসলমান হয়, তাহলে তখন থেকে তার উপর আযাব শুরু হয়ে যায় এবং কেয়ামত পর্যন্ত তা চলতে থাকে।
২. হাশর ও কেয়ামত অধ্যায় এর সময়কাল কেয়ামত আরম্ভের পর থেকে বিচারকার্য শেষ হওয়া পর্যন্ত। কঠিন মাত্রায় ভ‚মিকম্প হলে যেমন সবকিছু চুরমার হয়ে যায়, তেমনি কেয়ামতের সময় সমগ্র বিশ্বের সবকিছু ভেঙ্গেচুরে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। এই মহাপ্রলয়শেষে দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর সকল মানুষের পুনরুত্থান হবে। দুনিয়াতে কে কী আমল করেছে, তার হিসাব হবে এবং হিসাবে যাদের নেক আমল বেশী হবে, তারা জান্নাতে যাবার অনুমতি পাবে। আর যাদের বদ আমলের পাল্লা ভারী হবে, তাদেকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এরই নাম হাশর ও কেয়ামত; মৃত্যুর পরের দ্বিতীয় অধ্যায়।
৩. জান্নাত ও জাহান্নাম অধ্যায় বিচারশেষে জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হবার পর এ অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং অনন্তকাল চলতে থাকবে। যারা জান্নাতি হবে, তারা এমন সুখ ও সম্ভোগে থাকবে, যা দুনিয়ার কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো হৃদয়ে তার কল্পনাও আসেনি। আর যারা দোযখে যাবে, তারা কঠিন থেকে কঠিন আযাব ও শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। অর্থাৎ জান্নাত ও জাহান্নাম মৃত্যুর পরের তৃতীয় এবং শেষ অধ্যায়। এখানে মানুষ স্ব-স্ব আমল অনুসারে অবস্থান করবে।
- নাম : চোখে দেখা কবরের আযাব
- লেখক: মাওলানা তারিক জামিল
- অনুবাদক: হযরত মাওলানা আবদুল করীম
- প্রকাশনী: : অতিক্রম
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 216
- ভাষা : bangla & arabic
- বান্ডিং : hard cover
- ISBN : 9789848873883
- প্রথম প্রকাশ: 2024