 
            
    বাংলাদেশের আদিবাসীদের কথা
ফ্ল্যাপে লিখা কথা
‘বাংলাদেশের আদিবাসীদের কথা’ বইটিতে এ দেশের বসবাসরত ২০ টির অধিক জাতি ও নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারনা তুলে ধরা হয়েছে। সুদীর্ঘকাল থেকে অসংখ্যক জনগোষ্ঠীর পদচারণায় মুখর এই জনপদ। একমাত্র ইংরেজ ব্যতীত আর সকল মানব গোষ্ঠী এই দেশের রুপ-রস-গন্ধের সাথে মিশে গেছে। শেকড়ের সাথে তরলায়িত হয়ে তারা আজ গর্বিত বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ অংশ। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির পাশাপাশি চাকমরা, মরমা, মণিপুরী, গারো, সাঁওতাল, রাখাইন, টিপরাসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী অনিন্দ সুন্দর আবাস গড়ে তুলেছে । বঙ্গ, বাংলা, বঙ্গদেশ বা বাংলাদেশে তাদের আগমনকালও বিভিন্ন। প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে আর্য জাতি ভারত বর্ষে আগমন করে । তারা অনেক চেষ্টা করেও বঙ্গদেশে প্রবেশ করতে পারেনি। আদি বাঙালিদের প্রতিরোধের মুখে তাদের অগ্রযাত্র ব্যহত হয়। কালক্রমে বাঙ্গালী জাতি বাংলায় উন্নত কৃষ্টি-সংস্কৃতি-সভ্যতা গড়ে তোলে। পুন্ড্র, পাহাড়পুর ,ময়নামতি প্রভৃতি স্থানের সভ্যতা এখানে বাঙ্গালীর প্রাচীনত্ব প্রমাণ করে। ইদানিং উয়ারী বটেশ্বরে সভ্যতাকে প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার বাঙালী সভ্যতাকে পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার সমকক্ষ আসনে উপনীত করেছে।
বাঙালির অনেক পরে চাকমা,মারমা,রাখাইন, গারো, মণিপুরী, সাঁওতাল জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আগমন করে। কালের বিচারে তারাও আজ এই দেশে প্রাচীন। কিন্তু কোন একটি দেশে বর্তমান বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত আদি বা প্রথম থেকে বাস করছে তারাই আদিবাসী। ‘Ab origin es বা ‘Indigenous আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘from the beginning' এই অর্থে বাংলাদেশে আদি বা প্রথম বসবাসকপালী হচ্ছে ‘বাঙালী’ জনগোষ্ঠী। সুতরাং যুক্তিসঙ্গত কারনেই , বাংলাদেশের আদিবাসী হচ্ছে বাঙালি। কেউ কেউ নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল, প্রভৃতির যারা সাংস্কৃতিক দিক থেকে অনগ্রসর তাদেরকে বাংলাদেশের আদিবাসী হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রকৃত সত্যকে আড়াল করা যায়না। এই মানসে আলোচ্য গ্রন্থ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের আদিবাসী সম্পর্কে পাঠক সমাজের জিজ্ঞাসু দৃষ্টিভঙ্গিকে আরো প্রসারিত করার দিগন্ত উন্মোচনের চেষ্টা করা যায়।
ভূমিকা
সম্প্রতি উয়ারী বটেশ্বরে প্রত্নতাত্তিক আবিষ্কার এটাই প্রমাণ করেযে, বাংলাদেশের সভ্যতা অতি প্রাচীন। কালের পরিক্রমায় এ অঞ্চলে বহু জনগোষ্ঠীর আগমন হয় এবং এই বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের মিলিত ধারায় সমৃদ্ধ আজকের বাংলাদেশ। আয়তনে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র হলেও সাংস্কৃতিক এবং নৃ-তাত্ত্বিক বৈচিত্রে এই দেশে বৈচিত্রময়। প্রকৃতি যেমন আপন হাতে তার সম্পদদিয়ে সাজিয়েছেন রূপসি বাংলাকে তেমনি বাংলাদেশ জনগোষ্ঠীর বৈচিত্রেও বৈচিত্রময় ও সম্পদশালী। যদিও এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী বাংলাভাষী, বাংলাদেশ ভূখন্ডে ২০ এর অধিক ছোট ছোট নৃগোষ্ঠী তাদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য দিয়ে এদেশের বৃহত্তর সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এসব নৃগোষ্ঠী নিয়ে এখন পর্যন্ত অর্থবহ কাজ খুব একটা হয়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে খুরশীদ আলম সাগরের ‘ বাংলাদেশের আদিবাসীর কথা’ বইটি একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি আশা রাখি। বইটিতে জনাব আলম প্রাঞ্জল ভাষায় বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সার্বিক পরিচিতি তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। বইটি কেবল সাধারণ পাঠক নয়, একাডেমিক ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হবে। জনাব খুরশীদ আলম সাগর একজন দায়িত্ববান কর্মকর্তা। বহু ব্যস্ততার মধ্যেও এ ধরনের একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ দেশবাসিকে উপহার দিতে পেরেছেন তার জন্য জনাব আলমকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। আমি গ্রন্থটিরি বহুল প্রচার কামনা করি।
সূচিপত্র
* বাংলাদেশের আদিবাসী
* জাতি, উপজাতি ও নরগোষ্ঠী ধারণা
* বাংলাদেশের পরিচয়
* বাংলাদেশের জাতি উপজাতি-নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী
ক. বাঙালি
খ. চাকমা
গ. সাঁওতাল
ঘ. মণিপুরী
ঙ. মুরং বা ম্রো বা মোরো
চ. খাসিয়া
ছ. মারমা
জ. রাখাইন
ঞ. চাক
ট. মুণ্ডা
ঠ. কুকি
ড. হাজং
ঢ. লুসাই
ণ. লাউয়া মুসলমান
ত. পাঙন মুসলমান
থ. রাজবংশী
দ. ওরাও বা ওরাং
ধ. তংচঙ্গা
ন. সেন্দুজ
প. খুমী
* আদিবাসী কে ও কেন
* গ্রন্থপঞ্জি
- নাম : বাংলাদেশের আদিবাসীদের কথা
- লেখক: খুরশীদ আলম সাগর
- প্রকাশনী: : শোভা প্রকাশ
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 272
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9847991871

 
  
                 
                 
                 
                 
                 
                 
            




