
কীর্তনখোলার বাঁকে
পৃথিবীর প্রায় সব বড় বড় সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদীর তীরে। নদীর জোয়ার-ভাটা, ভাঙা-গড়া নিয়ে জীবনের সৃষ্টি এবং বিনাশ। বাংলা কবিতায় নদীকে উপজীব্য করে লেখা হয়েছে অগণিত কবিতা। মাইকেল মধুসূধন দত্তের কপোতাক্ষ, জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি, আল মাহমুদের তিতাস নদী আমাদের চেতনায় সদা প্রবাহমান। এরই ধারাবাহিকতায় মাসুদ চাকলার একটি কাব্যগ্রন্থ ‘কীর্তনখোলার বাঁকে’। কীর্তখোলা একটি উল্লেখযোগ্য নদী, যেটির অবস্থান বরিশালে। কবি মাসুদ চাকলা এই নদীর তীরেই বেড়ে উঠেছেন। ফলে তার মন-মনন-মেধা ও আবেগে এ নদীর উপস্থিতি প্রবল। ১১২ পৃষ্টার এই বইটতে সূচিবদ্ধ হয়েছে ৬৬টি ছোট-বড় কবিতা। বইটির শুরুর কবিতাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। কবি মাসুদ চাকলা লিখেছেন- ‘মহান তুমি মহান নেতা/তুমি বিশ্বলয়, ছিলে তুমি জগৎসেরা/তুমি আলোকময়।’ এ বইটি প্রকাশিত হয়েছে অমর একুশে বইমেলা ২০২১ সালে।
বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষতে কবির এ কবিতা বঙ্গবন্ধু প্রেমিদের আরো বেশি প্রেরণা যোগাবে। কবির শৈশব স্মৃতি খুবই সমৃদ্ধ। ‘শৈশব’ শিরোনামে লেখা তার কবিতাটি তার সাক্ষর বহন করে। তিনি লিখেছেন- ‘বাঁদর সেজে কাঁঠলগাছে/কাঁঠাল খেতাম কত,/ভেলায় চড়ে দিতাম সাঁতার/আমরা দলগত।’ গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা এ কবি শহুরে হলেও মনে মনে তার সেই গ্রামেই বসবাস। ডিজিটাল কবিতায় কবি লিখেছেনÑ ‘গাছের মাথায় উঠে সে/ফেইসবুক ঘাঁটে,/ পাঁজা করে হাঁটু গেড়ে/থাকে সে নেটে।’ সম-সাময়িক বিষয়ে ব্যঙ্গ করে লেখা এ কবিতার বাস্তবতা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কিন্তু মোটেই সুখকর নয়। প্রেম, বিরহ, প্রকৃতি, দর্শন নানা বিষয় কবির কবিতায় স্থান করে নিয়েছে। বিশেষ করে প্রেমের কবিতায় কবি যে স্বাবলীল এ কথা বইটির কবিতা পাঠ করলেই পাঠকগণ বুঝতে পারবেন। কবিতাগুলো লেখার সময়কালও উল্লেখ আছে কবিতাগুলোর নিচে। পেশা জীবনে ও নানা ব্যস্ততার মধ্যেও কবিতার প্রতি যে প্রীতি তাকে আরও পরিশীলিত ও ব্যাকরণ বিশেষ করে ছন্দ ও অলংকার সম্পর্কে মাসুদ চাকলাকে আরো বেশি মনোযোগী ও সচেতন হতে হবে। তার কবিতা চর্চা অব্যহত থাকুক ও পাঠকের সাথে তৈরি হোক আরো নিবিড় সম্পর্ক কবিতার মাধ্যমে।
- নাম : কীর্তনখোলার বাঁকে
- লেখক: মাসুদ চাকলা
- প্রকাশনী: : সাহিত্যদেশ
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 112
- ভাষা : bangla
- ISBN : 9789848069134
- বান্ডিং : hard cover
- প্রথম প্রকাশ: 2021