ইসহাক ফরিদী (৫ জুন ১৯৫৭ — ৫ জুন ২০০৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত, লেখক ও গবেষক।[১][২][৩][৪][৫][৬] বাংলা সাহিত্যিক আলেম হিসেবে তিনি ৭০-এর অধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনার করেছেন। তার আলোচিত বইগুলো ছিলো: ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন, ইসলামী রাষ্ট্র ও রাজনীতি, ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বাতিল যুগে যুগে, নবী প্রেমের অমর কাহিনী, উজ্জ্বল একটি নক্ষত্র, সুদ একটি অর্থনৈতিক অভিশাপ, জীবন গঠনে কুরআনের অবদান, ইসমতে আম্বিয়া (উর্দু), সিনেমার কুফল, কওমী মাদরাসা কি কেন? ইত্যাদি।[৭][৮][৯][১০]
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা ইসহাক ফরিদী ১৯৫৭ সালের ৫ জুন মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন হোগলাকান্দি গ্ৰামে জন্মগ্ৰহণ করেন। তার পিতা আব্দুস সালাম সিকদার ও মাতা সাকিনা বেগম। দীর্ঘ ১৮ বছর নিঃসন্তান জীবন কাটানোর পর তার জন্ম হওয়ায় তার মাতাপিতা ইব্রাহিম ও সারার ইসলামি কিংবদন্তি স্মরণ করে তার নাম রাখেন ইসহাক। তিনি নিজ গ্ৰাম হোগলাকান্দি জামে মসজিদ মাদ্রাসায় কুরআনুল কারিম হিফজ করেন। হিফজ শেষ করে নারায়ণগঞ্জ জেলার দেওভোগ এবং ঢাকার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় প্রথম কয়েকটি ক্লাস অধ্যয়ন করেন। এরপর কাফিয়া শরহেজামি শরহেবেকায়া হেদায়া ও জালালাইন জামাত পড়েছেন ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদে। বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর অধীনে কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় শরহেবেকায়া জামাতে তিনি সারাদেশে ২য় স্থান অর্জন করেন। সর্বশেষ বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর অধীনে জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসা থেকে ১৯৮৩ সালে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ৩য় স্থান অর্জন করেন।[১১][১২]
কর্মজীবন শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম কুমিল্লায় শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। তিনি যখন কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায় গমন করেন তখন তা ছিল কাফিয়া জামাতে সীমাবদ্ধ। এক বছরেই সেটাকে দাওরা হাদীসে উন্নীত করেন। এখানে তার চেতনা যোগ্যতা সমকালিন বিষয়ে সচেতনতা আদর্শিক প্রেরণা এবং মননশীলতার বিকাশ ঘটে। তিনি শিক্ষাদানে বাংলা সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তিনি পরবর্তীতে নিজ এলাকায় রওযাতুল উলূম কাউনিয়াকান্দি মাদরাসা, পীরজঙ্গি মাদরাসা, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা এবং সর্বশেষ চৌধুরী পাড়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। কর্মজীবনে তিনি কিছু দিন ঢাকার শাহজাহানপুরের ঝিলমসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি মিফতাহুল উলূম মধ্যবাড্ডা, দেওভোগ ও চৌধুরী পাড়া মাদরাসার শায়খুল হাদীস ছিলেন। তিনি অসংখ্য মসজিদ মাদ্রাসার তত্ত্বাবধান করতেন। তিনি কলিমউল্লাহ কওমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা বর্তমানে ইসহাক ফরিদী রহ. কমপ্লেক্স নামে চলমান।[১২]